দেশটিবি ডেস্ক :সুনামগঞ্জ ছাতকের জাহিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সন্ত্রাসী হামলায় ১০ জন লোক গুরুত্বর আহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় উপজেলা দোলার বাজার জাহিদপুরগ্রামের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক ও আব্দুল খালিক এর নেতৃত্বে জাহিদপুর বাজারে এসন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
গুরুত্বর আহতরা হলেন, ছাতক উপজেলার দোলার বাজার জাহিদপুর গ্রামের সাবেক বিদ্যালয়ের সভাপতি আজব আলী ও ছেলে আইমান উদ্দিন, মিছবা উদ্দিন, আজির উদ্দিন, গেলাপ উদ্দিন, মনির উদ্দিন, জিতু মিয়া।
এলাকা সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের গভর্ণিং বডি কমিটি গঠন না করে বিভিন্ন টালবাহানা করে যাচ্ছেন। এলাকার কেউ এ বিষয়ে কথা বললে প্রাণ নাশের হুমকি, মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকেন। আজব আলী এলাকার একজন বিশিষ্ট শিক্ষা অনুরাগী স্কুল বিষয়ে কথা বলার কারনে ৫ই আগষ্ট বিকাল ৪টায় জাহিদপুর বাজারে গেলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উতপেতে থাকা জাহিদপুর গ্রামের মৃত আফরিজ আলীর ছেলে মাস্টার আব্দুল মালিক ও আব্দুল খালিক, মৃত কামাল এর ছেলে এনায়েত মিয়া, মৃত আছদ্দর আলীর ছেলে নুরু ইসলাম ও নুরুল হক, মৃত ওয়ারিত উল্লার ছেলে সুমন উদ্দিন ও মিলন উদ্দিন, মৃত রইছ উল্লার ছেলে ছাদিক উদ্দিন, নুরু ইসলামের ছেলে আমিনুল হক, বাদশা মিয়ার ছেলে আতিক মিয়া, আফছারের ছেলে শাহীন উদ্দিন, জালালের ছেলে জোবেল মিয়া, নরসিংহপুরের মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে আনর উদ্দিন, মৃত ওয়ারিছ উল্লাহর ছেলে সিরাজ উদ্দিন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আহতদের উপর আক্রমণ চালায়।
জানা যায় পরিচালনা পর্ষদের কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ই আগষ্ট মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় ছাতক উপজেলার দোলার বাজার জাহিদপুর গ্রামের জাহিদপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক ও তার ভাই আব্দুল খালিক এর নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় গুরুত্বর আহত ১০ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে আহতরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজব আলী বিদ্যালয়ের গভর্ণিং বডির নির্বাচনে তিনি প্রার্থী ছিলেন। শিক্ষানুরাগী ও বিদ্যালয়ের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে কথা বলার কারনে তাদের উপর হামলা চালায় বলে স্থানীয়রা জানান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুন তারিখে মোহাম্মদপুর গ্রামে আহবাব উদ্দিন, আজিজুর রহমান জাহিদপুর গ্রামের আজব আলী জাহিদপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার এর মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
তারা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তারা অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। বিগত ৩টি মেয়াদ অত্র বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়েছে এডহক কমিটির মাধ্যমে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিচ্ছার কারনে এলাকাবাসী ম্যানেজিং কমিটি গঠন করতে পারেনি। এমনকি এডহক কমিটিতে থাকা লোকজনকে প্রধান শিক্ষক কখনো কমিটির কার্যক্রমে যুক্ত করেনি। প্রধান শিক্ষক এডহক আধিপত্য বিস্তার করতে কমিটি গঠনে দায়িত্বহীনতা প্রকাশ করেন। এলাকার অভিভাবকদের চাপে তিনি কমিটি গঠনে রাজি হন। এলাকাবাসীর সম্মতিতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট এক কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু তাহার পছন্দ ব্যক্তি সভাপতি করতে বিভিন্ন ফন্দি-ফিকির করতে থাকেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর মনোনীত সদস্যদের মনোনীত না করে নিজের পছন্দমত সভাপতি মনোনীত করার খবর পেয়ে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে সংলগ্ন বাজারে এক সভায় উক্ত কমিটি প্রত্যাখান করেন। এমনকি উক্ত সভায় প্রধান শিক্ষকের উপস্থিত থাকার আহ্বান জানালে তিনি থাকেননি। ২/৩ দিন পর প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন নিয়মকে অনিয়ম বানিয়ে ইচ্ছা মাফিক বিদ্যালয় চালাচ্ছেন। যার কারনে শিক্ষার মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ ছাড়া ফ্যাসিলিটি ডিপার্টমেন্ট হতে প্রাপ্ত ১১ লক্ষ টাকার কোন হিসাব মিলছে না। বিদ্যালয়ে এই সব অভিযোগের কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক ও তার ভাই সন্ত্রাস আব্দুল খালিক আর লোকজন মিলে এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেন।