নিজস্ব প্রতিবেদক: শিগগিরই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্টের সেবা। গত ২২শে ফেব্রুয়ারি ই-পাসপোর্ট পরিষেবা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি মাসেই সিলেটে ওসমানী বিমানবন্দরে ই-পাসপোর্টের মাধ্যমে ইমিগ্রেশনের সেবা শুরু হবে। বিষয়টির কার্যক্রম কীভাবে দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করা যায় তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি হওয়ার কারণে ইমিগ্রেশনের প্রত্যেকটি বিভাগ নতুন করে সাজানো হচ্ছে। ই-পাসপোর্ট নিয়ে যাত্রীরা যাতে বিমানবন্দরে ভোগান্তির মধ্যে না পড়েন সেদিক লক্ষ্য রেখে কাজ করছেন তারা।
কর্তৃপক্ষ বলছেন, ই-পাসপোর্ট অত্যন্ত নিরাপদ ও উন্নত প্রযুক্তির একটি পাসপোর্ট। ভ্রমণকারীরা খুবই দ্রুত ও সহজে বিমানবন্দরের ই-গেটের মাধ্যমে নিজেই নিজের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে দেশের বাইরে যেতে পারবেন। ফলে বিভিন্ন বিমানবন্দরে তাদের ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এতে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে যাত্রীরা যে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন বা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন তা আর থাকবে না। সময় বাঁচার ফলে কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে অন্যান্য কাজে মনোনিবেশ করতে পারবেন।
জানা যায়, হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইতিমধ্যে তিনটি ই-পাসপোর্ট গেট বসানো হয়েছে। পাশ-পাশি চট্টগ্রাম ও সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোরের বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আরো ৫০টি ই-গেট স্থাপন করা হবে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এসব ই-গেট স্থাপন করলেও এগুলো পরিচালনা করবে ইমিগ্রেশন বিভাগ।
জানা গেছে, ই-পাসপোর্ট এর মাধ্যমে একজন বিদেশগামী কারও সাহায্য ছাড়া নিজেই নিজের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াটি এক মিনিটেরও কম সময়ে সম্পন্ন হবে। পৃথিবীতে এর চেয়ে নিরাপদ ও সর্বাধুনিক পাসপোর্ট এখন পর্যন্ত উদ্ভাবন হয়নি। বিশ্বের ১১৮টি দেশে ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ হলো ১১৯তম দেশ। ই-পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে প্রবেশ করেছে। ইতিমধ্যে ঢাকার পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে শুরু করে সকল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হয়েছে।
অতি জরুরি আবেদনকারীরা দুই দিনের মধ্যেও ই-পাসপোর্ট পেতে পারেন। তবে এর জন্য লাগবে বাড়তি ফি। এর জন্য ২ দিনে সরবরাহ পেতে ৮ হাজার ৬২৫ টাকা দিতে হবে। এ ছাড়া সাধারণ ৫ বছর মেয়াদি ২১ দিনের নিয়মিত সরবরাহ ৪ হাজার ২৫ টাকা, ১০ দিনের দ্রুত সরবরাহ ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, ৪৮ পৃষ্ঠা ১০ বছর মেয়াদি ২১ দিন সরবরাহ ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, ১০ দিনের সরবরাহ ৮ হাজার ৫০ টাকা এবং ২ দিনের সরবরাহ ১০ হাজার ৩৫০ টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি ২১ দিনে সরবরাহ ৬ হাজার ৩২৫, ১০ দিনের সরবরাহ ৮ হাজার ৬২৫, ২ দিনের সরবরাহ ১২ হাজার ৭৫ টাকা, ৬৪ পৃষ্ঠা ১০ বছর মেয়াদি ২১ দিনের সরবরাহ ৮ হাজার ৫০, ১০ দিনের সরবরাহ ১০ হাজার ৩৫০, ২ দিনে সরবরাহ পেতে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।
সূত্র জানায়, বিমানবন্দরে ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। থাকবে ফিঙ্গার প্রিন্ট যাচাইয়ের ব্যবস্থাও। যাত্রীরা ই-গেটের মনিটরে নিজের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে নিজেই নিজের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করবেন। যদি পাসপোর্টধারীর বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকে বা তার তথ্য ও ছবিতে মিল না থাকে তবে ই-গেটে লালবাতি জ্বলে উঠবে। সূত্র জানায়, সব ঠিক থাকলে তিনি ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন। তবে কোনো গরমিল থাকলে লালবাতি জ্বলে উঠবে। তখন সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করবেন। কারো বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলে, সেটিও সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও) এই পিকেডি পরিচালনা করে। ফলে ইন্টারপোলসহ বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য যাচাই করতে পারে।