দেশ প্রতিবেদক।।
বাবার স্মৃতির খোঁজে ব্রিটেন থেকে কুষ্টিয়ায় দুই ভাই
তাদের বাবা অল্ডউইন স্মলার ছিলেন তৎকালীন ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানির সেতু প্রকৌশলী। ১৯৩৭ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে গড়াই নদীর ওপর রেলওয়ে সেতুর কাজ শুরু হলে তিনি ছিলেন সার্বিক দায়িত্বে।
সেতুটি নির্মাণ কাজ ১৯৩৭ সালে শুরু হয়ে সম্পন্ন হয় ১৯৩৯ সালে। সে সময় সৃষ্টির উল্লাসে আন্দোলিত নাইজেল স্মলারের বাবা অল্ডউইন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেতুর অনেক ছবি তোলেন।
ব্রিটিশ নাগরিক অল্ডউইন ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ের প্রকৌশলীর চাকরি নিয়ে ভারতে আসেন ত্রিশের দশকে প্রথম দিকে। তার কর্মস্থল নির্ধারণ হয় কুষ্টিয়াতে। নাইজেলের নানা ব্রিটিশ নাগরিক হলেও চাকরি সূত্রে বসবাস করতেন ভারতের নাগপুরে। তার মেয়ে তেরেসার সঙ্গে অল্ডউইনের বিয়ে হয়। ১৯৫১ সালে অল্ডউইন ইংল্যান্ডে ফিরে যান। ১৯৭৮ সালের ১৯ অক্টোবর ৭৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
মারা যাওয়ার পূর্বে তিনি বড় ছেলে নাইজেল স্মলারকে অনেক ছবি দেখান ও গড়াই সেতু তৈরির গল্প বলেন। বলেন, বাংলাদেশ তথা কুষ্টিয়া-কুমারখালির অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা। বাবার মৃত্যুর ২ বছর পর হঠাৎই যেন নাইজেল আক্রন্ত হন নস্টালজিয়ায়। বাবার সৃষ্টি গড়াই সেতু দেখতে হবে।
সেই থেকে স্বপ্ন দেখা শুরু। কিন্তু সময় ও সুযোগ হয়ে ওঠে না। ৩০ বছর ধরে স্বপ্ন দেখার পর গত ২৮ মার্চ নাইজেল স্মলার ও তার ছোট ভাই অড্রিন স্মলার এবং ভিয়েতনামি বন্ধু হুয়াং লি বাংলাদেশে আসেন। এদেশে তারা একটি টুরিস্ট কোম্পানির তত্ত্বাবধানে শুক্রবার (৭ মে) দুপুরে তারা ট্যুর ম্যানেজার মহিউদ্দিন জিয়ার সাথে গড়াই সেতুর দিকে যতে এগুতে থাকে, ততোই আবেগ তাড়িত হতে থাকেন স্মলার ভ্রাতৃদ্বয়। আবেগে আপ্লুত, বাকরুদ্ধ স্মলার দুই ভাই। বাবার সৃষ্টি তারা ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখেন। যেন বাবাকেই ছুঁয়ে দেখছেন তারা গভীর মমতায়। এ এক অন্য অনুভূতি