দেশ ডেক্সঃঃ
গ্রীষ্মের শুরুতে খুলনা মহানগরজুড়ে চলছে পানির হাহাকার। সেই সঙ্গে লবণাক্ত পানি ব্যবহার নিয়ে চরম বিপাকে খুলনা নগরীর ওয়াসার গ্রাহকরা। খুলনা ওয়াসা বলছে, মধুমতি নদীর পানিতে লবণাক্ততার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থা। নগরবাসী বলছেন, ঢাকঢোল পিটিয়ে ওয়াসার শত শত কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
২০১৮ সালে খুলনা ওয়াসা পাইপলাইনের মাধ্যমে নগরবাসীকে পানি সরবরাহ নতুনভাবে শুরু করে। কিন্তু ৩ বছর যেতে না যেতেই বিধি বাম। ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে এখন মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা দেখা দিয়েছে। ফলে চর্ম রোগ এবং চুল পড়ে যাওয়াসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে নগরবাসী। এ ছাড়া সেবা না দিয়েই নিজেদের ইচ্ছামতো বিলের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগও ওয়াসার বিরুদ্ধে।
বর্তমানে বাগেরহাটের মোল্লাহাটের মধুমতি নদী থেকে সংগ্রহের পর পরিশোধন করে প্রতিদিন নগরীতে সাড়ে ৩ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করছে খুলনা ওয়াসা। এ ছাড়া ভূগর্ভের ৪৮টি পাম্পের মাধ্যমে আড়াই কোটি লিটার পানি সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
নগরীর এক গ্রাহক বলেন, পানির বিল নিয়মিত দিয়ে যেতে হচ্ছে, কিন্তু পানি ব্যবহারের অনুপযোগী।
অপর এক গ্রাহক বলেন, বাসায় ওয়াসার যে পানি আসে, সেটা আসলে খাওয়ার উপযোগীই না।
নগরীর এক নারী বলেন, এই পানি ব্যবহারে গায়ে চুলকানি হচ্ছে, চুল পড়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আমরা পাম্প বসিয়েছি।
পরিস্থিতি বিবেচনায় লবণাক্ততা আরও বাড়লে প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা নাগরিক নেতার। খুলনা সুজনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, আমরা বিশুদ্ধ পানি চাই। কিন্তু যে পানি দেওয়া হচ্ছে, সেটি খুব বেশি হলেও গৃহস্থালি ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে ওয়াসা বলছে, ২০০৮ সালের প্রকল্পটির প্রাক সম্ভাব্যতা জরিপে শুষ্ক মৌসুমে মধুমতির পানিতে লবণাক্ততা ছিল না। তবে এখন লবণাক্ততার মাত্রা অস্বাভাবিক বেড়েছে। এ বিষয়ে খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে যারা বিশেষজ্ঞ আছেন, তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে যাতে আগামীতে এ ধরনের সমস্যা ন্যূনতম পর্যায়ে রাখা যায়, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
প্রসঙ্গত, আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পানি সরবরাহের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে খুলনা ওয়াসা। নগরীতে ওয়াসার গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ৩৮ হাজার।