বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউজিসির সচিব (চলতি দায়িত্ব) ও তদন্ত কমিটির সদস্য ড. ফেরদৌস জামান বলেন, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। সেখানে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অ্যাডহক ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি, তারাও সে সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সেখানে নির্ধারিত পদের চেয়ে অতিরিক্ত কর্মচারীকে অ্যাডহক ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা ধারণা করছি যে নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনের ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ বিভিন্ন তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। আগামীকাল (২৫ নভেম্বর) বুধবার তা পাঠানোর কথা রয়েছে। সেটি পেলে পরবর্তী এক সপ্তাহের তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
জানা গেছে, ইউজিসির অনুমোদিত পদের চেয়েও শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ম ভেঙে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এসব নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আত্মীয়করণ, স্বজনপ্রীতি, আর্থিক লেনদেনসহ বিভিন্ন রকম অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ইউজিসি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি মিলিয়ে রাজস্ব খাতে ১১৩টি পদে জনবল নিয়োগ দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়।
জানা গেছে, উন্মুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছিল ইউজিসি। এছাড়া ইউজিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থায়ী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত মোট ১৭৪ জনকে নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে ইউজিসির অনুমোদিত পদের বিপরীতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৬৪টি পদে। বাকি শতাধিক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অস্থায়ী ভিত্তিতে। এ অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দিতে গিয়েই অনিয়মগুলো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দেশের চতুর্থ এ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা ২০১৮ সালে। এখনো শুরু হয়নি নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ। শুরু হয়নি শিক্ষাকার্যক্রমও। এ অবস্থায় অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১৭৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এ ঘটনা তদন্ত করতে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন।