এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি।একারণে নির্বাচনে নেই দলীয় প্রতীক ধানের শীর্ষ।দলীয়ভাবে নির্বাচন-ভোট বর্জনের ঘোষণা থাকলেও ভোটে লড়ছেন দলটির নির্বাচনমুখি নেতারা।স্বতন্ত্রভাবে ভিন্ন প্রতীকে নির্বাচন করছেন তারা।তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে সিলেট জেলার তিনটি উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ১৪টিতেই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির ২৫ নেতা। কোনো কোনো ইউনিয়নে বিএনপিতে প্রার্থীজট সৃষ্টি হয়েছে, ভোটে লড়ছেন ৩/৪জন বিএনপি নেতা। একটি ইউনিয়নে একাধিক বিএনপি নেতার ভোটে অংশগ্রহণ নির্বাচনী আমেজে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে।
আগামী ২৮ নভেম্বর সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম, জালালপুর, মোগলাবাজার দাউদপুর ও লালাবাজার, গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাঁও, রস্তমপুর, লেংগুড়া, তোয়াকুল, ফতেহপুর ও ডৌবাড়ি এবং জৈন্তা ও চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
দক্ষিণ সুরমার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটিতেই প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন বিএনপি নেতারা।এরমধ্যে সিলাম ইউনিয়নে ছয়জন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন।এর মধ্যে স্বতন্ত্রের ব্যানারে বিএনপি নেতা আত্তর আলী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ্ ওলিদুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ মাহবুব আহমদ, মোহাম্মদ ফয়জুল হক ও সুমন মিয়া।
মোগলাবাজারে ছয়জন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা ময়নুল ইসলাম মঞ্জু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি, আওয়ামী লীগের তৃণমূলে নির্বাচিত ও বর্তমান ইউপি চেয়াম্যান বিদ্রোহী প্রার্থী ফখরুল ইসলাম সাইস্তা ও শামিনুল হক, নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছদরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের আব্দুল হামিদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মুকিত মিয়া।
জালালপুরে বিএনপির কোনো নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও ভোটে আছেন জামায়াত নেতা সোলাইমান হোসেন। অন্য তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন জালালপুর দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক, আওয়ামী লীগ থেকে তৃণমূলে নির্বাচিত বিদ্রোহী প্রার্থী নেছারুল হক বুস্তান, নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওয়েস আহমদ ও ইসলামী আন্দোলনের শেখ হারুনুর রশীদ।
লালাবাজার ইউনিয়নে ছয়জন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রার্থী তোয়াজিদুল হক, স্বতন্ত্র আব্দুল মুহিত, খালেদ আহমদ রাসেল, মামুনুর রহমান চৌধুরী ও শহিদুর রহমান।
দাউদপুর ইউনিয়নে চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ছালিক আহমদ ও দেলোয়ার হোসাইন।
গোয়াইঘাট উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১৪জন প্রার্থী রয়েছেন বিএনপির।
এমধ্যে নন্দীরগাঁও ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ছয় প্রার্থীর মধ্যে তিনজনই বিএনপির। তারা হলেন স্বতন্ত্র মোড়কে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন আহমদ, মামুনুর রশীদ শাহীন, আব্দুল ওয়াহিদ। অন্য প্রার্থীরা হলেন-উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান এস কামরুল হাসান আমিরুল। বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম ও হীরক দে।
রুস্তমপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের চারজনই বিএনপির। তারা হলেন স্বতন্ত্র চারজন প্রার্থী হলেন-আবুল কালাম আজাদ, শাহাব উদ্দিন শিহাব, হাবিবুর রহমান হাবিব ও সালেহ আহমদ। এছাড়া ভোটে লড়ছেন আওয়ামী লীগের হেলাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল মতিন, স্বতন্ত্রভাবে আব্দুল মজিদ সরকার ও আলী আমজাদ।
লেংগুড়া ইউনিয়নে পাঁচ প্রার্থীর তিনজনই বিএনপির। তারা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির মাহবুব আহমদ, সাবেক ছাত্রদল নেতা গোলাম কিবরিয়া ছত্তার ও বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান। অন্য দু’জনের একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুজিবুর রহমান মুজিব, বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও তৃণমূলে নির্বাচিত গোলাম কিবরিয়া রাসেল।
তোয়াকুল ইউনিয়নে বিএনপির একজনসহ চারজন প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির খালেদুর রহমান খালেদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান ও বিদ্রোহী প্রার্থী সামছুদ্দিন এবং ইসলামী আন্দেলনের আলীম উদ্দিন।
ফতেহপুর ইউনিয়নে সাত প্রার্থীর মধ্যে দু’জন রয়েছেন বিএনপির। প্রার্থীরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির মিনহাজ উদ্দিন ও মীর হোসাইন আমির, আওয়ামী লীগের নাজিম উদ্দিন এবং বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থ ইসলাম আলী, মৌলানা নিজাম উদ্দিন ও শাহ্ আলম।
ডৌবাড়ি ইউনিয়নে বিএনপির একজনসহ চারজন প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন বিএনপি ঘরনার স্বতন্ত্রপ্রার্থী দেলওয়ার হোসাইন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সুবাস দাস ও বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক নিজাম উদ্দিন এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের এনামুল ইসলাম।
জৈন্তাপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির আটজন বিএনপি নেতা। জৈন্তাপুর ইউনিয়নে বিএনপির একজনসহ সাত চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন বিএনপির আলমগীর হোসেন, নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক রাজা, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী দুই প্রার্থী আব্দুল হাই ও হুসেইন আহমদ। স্বতন্ত্র প্রার্থীআব্দুল আহাদ, ফখরুল ইসলাম ও নুরুল ইসলাম।
চারিকাটা ইউনিয়নে বিএনপির দু’জনসহ আটজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। তারা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী, বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরী তুফায়েল ও আলতাফ হোসেন বিলাল, আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন আজাদ, সুলতান করিম, হেলাল উদ্দিন হেলাল, বদরুল ইসলাম ও আফজাল হোসেন।
দরবস্ত ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে বিএনপির রয়েছেন দু’জন। তারা হলেন-স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা বাহারুল আলম বাহার ও বিএনপির খাইরুল আমিন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী কুতুব উদ্দিন, জমিয়তের প্রার্থী মাসউদ আজহার, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী জসিম উদ্দিন সিকদার।
ফতেপুর ইউনিয়নে তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ, আওয়ামী লীগের প্রার্থী রফিক আহমদ ও মাওলানা তফাজ্জুল হোসাইন।
চিকনুগুল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন-স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবু জাকারিয়া মো. আব্দুল বারী ও বিএনপির জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুজ্জামান চৌধুরী, আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী আমিনুর রশীদ ও ফয়জুল হাছান, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় পার্টির জালাল আহমদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাফিজ আব্দুল মুছাব্বির ফরিদ, ইসলামী আন্দোলনের হাফিজ ফয়সল আহমদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার রহিম চৌধুরী।