এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এক যুবক গ্রেপ্তারের ঘটনায় পাুলিশ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অপর খুনিদের ধরতে সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর আগে রুবেল আহমদ (২৮) নামে এই যুবককে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বড়লেখা সদর ইউপির কেছরিগুল গ্রামের শহিদুল ইসলাম, আজিজ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন, মাহমুদুর রহমান ও মাইজপাড়া গ্রামের আহমেদ। এই ঘটনায় শুক্রবার রাতেই থানায় মামলা হয়েছে। নিহত রুবেলের ছোট ভাই ফয়ছল আহমদ বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সাবুল আহমদ ও তার ভাই সাবেক মেম্বার সরফ উদ্দিন নবাবসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ১৫-১৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
থানা পুলিশ, স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (৮ এপ্রিল) জুমার নামাজের সময় বড়লেখা সদর ইউপির কেছরিগুল জামে মসজিদে জনৈক জামাল আহমদের সঙ্গে বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার সরফ উদ্দিন নবাবের কথা কাটাকাটি হয়। পরে এলাকার লোকজন বিষয়টি সমাধান করে দেন। আসরের নামাজের সময় জামাল আহমদের ছেলে ও ভাতিজাদের সঙ্গে সদর ইউপির মেম্বার সাবুল আহমদের ভাই সরফ উদ্দিন নবাবের ছেলে ও ভাতিজাদের ঝগড়া হয়। ঘটনার সময় রুবেল আহমদ কাজ শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন। এসময় তাকে (রুবেলকে) জামাল আহমদের পক্ষের লোক ভেবে আটকে রেখে মারধর শুরু করেন ইউপির মেম্বার সাবুল আহমদ ও তার ভাই সরফ উদ্দিন নবাব গংরা। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে রুবেল গুরুতর আহত হন। রুবেলকে বাঁচাতে গিয়ে তার ভাই সুমন আহমদও আহত হন। পরে স্থানীয়রা রুবেলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এদিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসাপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহত রুবেল সদর ইউপির কেছরিগুল গ্রামের মৃত ছয়েফ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী ছিলেন।
নিহত রুবেলের চাচাতো ভাই এমরান আহমদ বলেন, আমার চাচাতো ভাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। ঘটনার সময় তিনি কাজ শেষে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এসময় তাকে (রুবেলকে) জামাল আহমদের পক্ষের লোক ভেবে ধরে মারধর শুরু করেন ইউপির মেম্বার সাবুল আহমদ ও তার ভাই সাবেক মেম্বার সরফ উদ্দিন নবাব গংরা। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। তিনি বলেন, আমার চাচাতো ভাই নির্দোষ। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই তাকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করে তারা হত্যা করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
বড়লেখা থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, রুবেলের স্বজন ও স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্য সাবুল আহমদ ও তার ভাই-ভাতিজা মিলে রুবেলকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার পর তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ বিভিন্নস্থানে চালিয়েছে। ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাতে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের আদালতে পাঠনো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।